IQNA

মসজিদে ব্যবহৃত বিশেষ পরিভাষা

17:49 - August 28, 2021
1
সংবাদ: 3470570
তেহরান (ইকনা): প্রতিটি স্থানের জন্য কিছু পরিভাষা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। মহান আল্লাহর ঘর মসজিদের ক্ষেত্রেও কিছু পরিভাষা ব্যবহৃত হয়।

আজ আমরা মসজিদ সংক্রান্ত তেমনই কিছু পরিভাষা সম্পর্কে অবগত হব।

খতিব : ‘খতিব’ অর্থ বক্তা, ভাষণ প্রদানকারী। যিনি জুমার নামাজের খুতবা দান করেন এবং ওই নামাজ পড়ান, তিনিই খতিব। জামে মসজিদের তিনি প্রধান ধর্মীয় কর্তা।

পেশ ইমাম : ‘পেশ ইমাম’ অর্থ অগ্রবর্তী ইমাম। যিনি পাঞ্জেগানা নামাজের প্রধান ইমাম। মসজিদে একাধিক ইমাম থাকলে তিনি প্রধান ইমামের দায়িত্ব পালন করেন এবং খতিবের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ীভাবে জুমার নামাজ পড়ান।

ইমাম : ‘ইমাম’ অর্থ নেতা—ধর্মীয় নেতা। যিনি মসজিদে ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়ান; কিন্তু পেশ ইমাম নন।

মুয়াজ্জিন : ‘মুয়াজ্জিন’ অর্থ যিনি মসজিদে নামাজের আজান ও ইকামত দেন। মসজিদের পরিচ্ছন্নতা ও ইবাদতের পরিবেশ তৈরিতে তিনি খাদিমদের নিয়ে কার্যাবলি সমন্বয় করেন।

একাধিক মুয়াজ্জিন থাকলে একজনকে ‘প্রধান মুয়াজ্জিন’ আখ্যায়িত করা যায়।

খাদিম : ‘খাদিম’ বা ‘খাদেম’ অর্থ সেবক। যিনি নামাজ পড়ানো ও আজান দেওয়া ছাড়া মসজিদের অন্য কাজ সম্পাদন করেন। বিশেষত, পরিচ্ছন্নতা ও মুসল্লিদের সেবা প্রদান ও ইবাদতের পরিবেশ নির্বিঘ্ন করার খিদমত আঞ্জাম দেন। মসজিদে একাধিক খাদিম থাকলে যোগদানের ধারাক্রম অনুযায়ী সিনিয়র ও জুনিয়র খাদিম ক্যাটাগরি ভাগ করা যায়। বিশেষ অবস্থায় খাদিম আজান ও ইকামত দিতে পারেন; কিন্তু নামাজ পড়ানো সমীচীন নয়।

মসজিদ কমিটি : ‘মসজিদ পরিচালনা কমিটি’ সংশ্লিষ্ট মসজিদের সেসব ধর্মপ্রাণ মুসল্লি, যাঁরা মসজিদের ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন, আয়-ব্যয় ও ক্রম-উন্নতির লক্ষ্যে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেন এবং তাঁরা ওয়াকফের শর্ত ও গঠনতন্ত্রের বিধি-নিষেধের আওতাধীন।

মুতাওয়াল্লি : ‘মুতাওয়াল্লি’ অর্থ অভিভাবক। যিনি মসজিদে জমি দান করেন, স্থায়ীভাবে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ওয়াকফ করেন, তিনিই মুতাওয়াল্লি। একাধিক জমিদাতা হলে এক প্রতিষ্ঠানে একাধিক মুতাওয়াল্লি থাকতে পারেন।

কোনো মসজিদে যৌথ মুতাওয়াল্লি থাকলে ওয়াকফ আইনের ৬৭ ধারা মোতাবেক একে অন্যর মতামতের ভিত্তিতে মসজিদের সব কাজ সম্পাদন করবেন। (সূত্র : ওয়াকফ প্রশাসন আইন, ১৯৬২)

মিনার : মিনার শব্দটি আরবি। শব্দগতভাবে যে স্থান থেকে আলো বিচ্ছুরিত হয় তা-ই মিনার।

মসজিদের মিনারের শীর্ষভাগ মসজিদের থেকে উঁচু হয়। আজানের আওয়াজ দূরে পৌঁছানোর জন্য মিনারের ব্যবহার হয়। আধুনিক যুগে মাইকের সাহায্যে আজান দেওয়া হয়। এর পরও মসজিদের স্থাপত্যে মিনারের ব্যবহার আছে। মিনারের শীর্ষে মাইক যুক্ত করে শব্দ দূরে পৌঁছানো যায়।

মিহরাব : মিহরাব অর্থ ঘরের বক্ষ বা কেন্দ্রীয় কক্ষ। ইমাম আবু হানিফার মতে, ‘মিহরাব হলো রাষ্ট্রনায়কদের অতীব সম্মানিত আসন।’ (লিসানুল আরব, ইবনুল মানজুর, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩০৬)

মিহরাব মসজিদের কিবলামুখী দেয়াল ঘেঁষে ঠিক মাঝখানে নির্মাণ করা হয়। এখানে দাঁড়িয়ে ইমাম নামাজের নেতৃত্ব দেন। তাই মিহরাবের অবস্থান সাধারণ মুসল্লিদের সারি থেকে একটু সামনে করা হয়ে থাকে। সাধারণত তা নামাজঘরের মূল অংশের বাইরের দিকে বাড়তি অংশে থাকে। মিহরাব ডিম্বাকৃতি, আয়তাকৃতি কিংবা গোলাকৃতির হয়ে থাকে।

মিম্বার : মিম্বার হলো মসজিদে ইমামের খুতবা দেওয়ার নির্ধারিত উঁচু স্থান। মিম্বার সাধারণত মেঝে থেকে কয়েক ধাপ উঁচু হয়ে থাকে। তবে ছোট টাওয়ার আকারের মিম্বারও দেখা যায়। রাসুল (সা.) তিন ধাপবিশিষ্ট মিম্বার ব্যবহার করতেন। মিহরাবের ডান পাশে মিম্বার স্থাপন করা হয়। মিম্বার ইমামের কর্তৃত্বের একটি নিদর্শন।

গম্বুজ : গম্বুজ স্থাপত্যগত বৈশিষ্ট্য। এটি ভবনের ওপর গোলাকৃতিতে স্থাপিত থাকে।

অজুখানা : মুসল্লিদের অজু করার সুবিধার্থে মসজিদের নির্ধারিত স্থানে অজু করার জায়গার নাম অজুখানা।

মসজিদের বারান্দা : ওয়াকফকারী মুতাওয়াল্লি বা মসজিদ কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে নির্মাণকালে মসজিদের বারান্দার সীমানা নির্ধারিত হয়। তখন যতটুকু জায়গা তারা নামাজ আদায়ের জন্য নির্ধারণ করবেন, তা-ই মসজিদ হিসেবে গণ্য হবে। বাকি অংশ বারান্দা হিসেবে গণ্য হবে। মূলনীতির ওপর নির্ভর করে যদি কোনো সিদ্ধান্ত জানা না থাকে, তাহলে সতর্কতামূলক বারান্দা মসজিদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ৪/৩৪৩, আল বাহরুর রায়েক : ৫/৪১৬, ফাতাওয়ায়ে তাতার খানিয়া : ৮/১৫৬)

লেখক : খতিব, বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদ জি ব্লক, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা

প্রকাশিত: 1
পর্যালোচনা করা হচ্ছে: 0
প্রকাশযোগ্য নয়: 0
How Can I Lose Weight Fast
0
0
How Can I Lose Weight Fast
http://howcaniloseweight-fast.com/
captcha